ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ, ২৪ ঘন্টায় উদ্ধার হয়নি, ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Shaid pekua_resizedমুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মো.শহিদুল্লাহকে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে একদল দূর্বূত্ত অপহরণ করে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরনের ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও শহীদ চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। গত ২৯মার্চ রাত ১১টার দিকে একদল দূর্বূত্ত তাকে টৈটং ইউনিয়নের জালিয়ার চাং নামক এলাকা থেকে অস্ত্রের মূখে জিম্মি করে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। শহিদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেলিনা আকতার অভিযোগ করেছেন, ওইদিন বনকানন ষ্টেশনে তার নির্বাচনী পথসভা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথিমধ্যে ওই এলাকা থেকে টইটং ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী লোক তাকে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এদিকে শহিদ চেয়ারম্যানেক অপহরনের খবর এলাকা ছড়িয়ে পড়লে রাত ১২ টার দিকে হাজার হাজার মানুষ টইটং বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েও অপহৃত শহিদ চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করতে পারেনি। এদিকে আজ বুধবার রাতে অপহৃত শহিদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং ৯। মামলার আসামীরা হলেন, টইটং ইউননিয়নের আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী একই ইউনিয়নের পন্ডিত পাড়া গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশ নাবালক মিয়ার পুত্র জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী ও তার ভাই মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, মগনামা ইউনিয়নের কাজি মার্কেট এলাকার মঈনুল হকের পুত্র লিটন, টইটং ইউনিয়নের ঝুম পাড়া গ্রামের মো. হোছাইনের পুত্র আবদুল জলিল, একই ইউনিয়নের মধু হাজির পাড়া গ্রামের ছাবের আহমদের পুত্র আবুল কালাম।

মামলার এজাহারে অপহৃত শহীদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী উল্লেখ করেছেন, গত ২৯ মার্চ রাত সাড়ে ১০টার দিকে টইটং বন কানন এলাকা বাজারে তার স্বামী ইউপি চেয়ারম্যানপ্রার্থী শহিদুল্লাহ নির্বাচনী পথসভা শেষ করে বাড়ী ফেরার পথে জালিয়ারচাং রাস্তায় মাথায় পৌঁছালে অপর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে অপরাপর আসামীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার স্বামীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী নির্বাচন প্রচারণা শুরুর পর থেকে তার প্রতিটি জনসভায় প্রকাশ্যে তার স্বামী শহিদ চেয়ারম্যানকে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। তার স্বামীর জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত হয়ে জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী সুকৌশলে পরিকল্পিতভা হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।

এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় টইটং ইউনিয়নের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল্লাহকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করতে না পারায় তার পরিবারে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। গতকাল বুধবার বিকালে শহিদ চেয়ারম্যানের বাসভবনে তার স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীর জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী নির্দেশে তার লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছে। তিনি দ্রুত তার স্বামীকে অপহরণ ঘটনার মূলহোতা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন। অপরদিকে পেকুয়া উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ও টৈটং ইউপির দু’বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহর ভাগ্যে কি জুটেছে বিধাতাই জানেন। তিনি অপহৃত হওয়ার পর থেকে পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তৈরি হয়েছে উদ্বেগ ও নানা উৎকন্ঠা।

 পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভূঁইয়া জানান, অপহৃত শহিদ চেয়ারম্যানে স্ত্রী বাদি হয়ে বুধবার রাতে থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের গ্রেফতার ও অপহৃত শহীদ চেয়ারম্যানকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

 

পাঠকের মতামত: